Where are those happy days, they seem so hard to find
I try to reach for you but you have closed your mind
Whatever happened to our love? I wish I understood
It used to be so nice, it used to be so good
So when you’re near me, darling can’t you hear me, S.O.S.
The love you gave me, nothing else can save me, S.O.S.
When you’re gone
How can I even try to go on?
When you’re gone
Though I try, how can I carry on?
You seemed so far away, though you were standing near
You made me feel alive but something died, I fear
I really tried to make it up, I wish I understood
What happened to our love, it used to be so good
So when you’re near me, darling can’t you hear me, S.O.S.
The love you gave me, nothing else can save me, S.O.S.
When you’re gone
How can I even try to go on?
When you’re gone
Though I try, how can I carry on?
So when you’re near me, darling can’t you hear me, S.O.S.
And the love you gave me, nothing else can save me, S.O.S.
When you’re gone
How can I even try to go on?
When you’re gone
Though I try, how can I carry on?
When you’re gone
How can I even try to go on?
When you’re gone
Though I try, how can I carry on?
(আব্বা গোষ্ঠীর গান SOS)
আমাদের বাড়ির কোণের ঘরটা একটেরে। ওটাকে ঠাকুরঘর বলা হত। মায়ের ঠাকুরের আসন পাতা ছিল আমাদের গোটা শৈশব জুড়ে। তারপর আমাদের বড় হবার সংগে সংগে ওটা ঠাকুরঘর কম আর আমাদের পড়ার ঘর বেশি হয়ে গেল। প্রথমে দিদি দখল করল বাবার বিশাল বড় সেক্রেটারিয়েট টেবিলটা। সে টেবিলের কাঠ কালো হয়ে গেছে। ভীষণ ভারি। ওপরে মেরুন চামড়া ঢাকা। তার দেরাজে বাবার হাতে লেখা ডায়েরি খুঁজে পাওয়া যায়। পাওয়া যায় মায়ের আঁকার সরঞ্জামও। বহুদিন কেউ হাত দেয়নি এমন সব জিনিস থাকে নানা গর্তে, গুহায় । সে টেবিল আমার কাছে তখনো অধরা , না ছোঁয়া। দিদি শুধু নিজের ইলেভেন টুয়েলভের ফিজিক্স কেমিস্ট্রির বই রাখে আর তাড়া তাড়া খাতা। যে খাতাগুলো তৈরি হয় মির্জাপুর স্ট্রিট থেকে সস্তায় কিনে আনা ছাঁট কাগজ দিয়ে।
রেডিও আমাদের বাড়িতে সারাদিন চলে। মায়ের সারা সকালের কাজের ফাঁকে ফাঁকে সকাল পৌনে আটটার রবীন্দ্রসংগীত, অসংখ্যবার খবর, সংবাদ পরিক্রমা, দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, সংগীত শিক্ষার আসর সব শোনার পর শীতের দুপুরে, শনি বা রবিবারের দুপুরে খেতে বসার সময়ে অনুরোধের আসরে মায়াময় অনুপ ঘোষাল আরতি মুখার্জি শুনতে শুনতে ঘন ডালের সঙ্গে ভাত মেখে সঙ্গে আলু পেয়াঁজকলি ভাজা, বেগুনভাজা আর নারকেলের বড়া খাওয়া হয়ে গেলে যখন কলকাতা ক নীরব হয়ে যায়, বুঁ আওয়াজের মায়ায় ঘুমিয়ে পড়ে, দিদি তখন সে ট্রানজিস্টার রেডিওটা বগলদাবা করে চলে যায় ওই কোণের ঘরেই। লাঞ্চটাইম ভ্যারাইটি শোনে, কলকাতা খ খুলে। শোনে সেইসব গান, এখন যেগুলোকে সহজেই ‘ব্যান্ডের গান” বলে চিনে নেয় নয়া প্রজন্ম। বাংলা ব্যান্ডের তখনো বছর কুড়ি দেরি এ ভবমঞ্চে পারফর্ম করতে। মার্কিন আর ব্রিটিশ , তখনো ইংরেজি গানের ব্যান্ড এই দুই প্রকার। বংশলতিকার ওপর দিকে আছেন মহামান্য লম্বাচুলো বিটলবাবুরা চারজন, যাঁরা নাকি আবার “আমাদের” রবিশংকরের কাছেও নাড়া বাঁধেন। তবে সেসব ত আগের প্রজন্ম। ততদিনে নতুন সব নাম এসে গিয়েছে বাজারে। রোলিং স্টোন, পিংক ফ্লয়েড, ডিপ পার্পল…
কলকাতা খ আমাদের শৈশব কৈশোরের এক টুকরো মার্কিনি বা ইংরেজি সংস্কৃতির রাজধানী, এক টুকরো ওয়েসিস উঠন্তি বয়সের ইশকুলে পড়া, ইংরেজি শেখা, মধ্যবিত্ত ছেলেমেয়েদের কাছে। ভাল লেখাপড়া করে তারা অনেকেই তারপর পাড়ি দেবে বিদেশে। তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনও যেন এই গানে। দিদি আর দিদির দু তিন বান্ধবী সেইসব অনুষ্ঠানের নিয়মিত শ্রোতা। ইংরেজি গানের পোকা। গান উঠেছে তখন কার্পেন্টারের, ইয়াস্টারডে ওয়ান্স মোর। সুরের ঝংকার আর কথার মাদকতা মিলেমিশে গেছে। দিদি শুধু এসব গান শোনেইনা, গুনগুন করে, আর দীর্ঘ সময় ধরে বান্ধবীদের সঙ্গে মোটা কালো কোলাব্যাঙের মত আমাদের টেলিফোনটা নিয়ে বসে এসব নিয়ে আড্ডাও দেয় বিকেলবেলা। আমাদের টেলিফোন নম্বর ছয় ডিজিটের, মুখস্ত থাকে ভাল, ফোর সেভেন ফাইভ টু সিক্স টু।
এসব গানের মায়া এতই, যে, নস্টালজিয়ায়, আজো কার্পেন্টার আর আব্বার গান শুনলে আমার চোখে জল এসে যায়। আমার বয়স দশ , দিদির পনেরো ষোল। সময়টা সত্তর দশকের মাঝামাঝি। এই সব সময়ে দিদি ওই গানগুলো শুনত আর গাইত। কার্পেন্টার আর আব্বার রেকর্ড কেনা হয়েছিল লং প্লেইং। আমাদের সেই এইচ এম ভির রেকর্ড প্লেয়ার ততদিনে বৃদ্ধ। কতবার সারানো হয়েছে তাকে। সে আমাকে দিয়েছে সদ্য টিনেজ হয়ে ওঠা সন্ধেতে, ঘর অন্ধকার করে ঠুংরিয়াঁ শোনার ফাঁকফোকর। একা একা গান শুনে কাঁদা, আনন্দ পাওয়া, প্রেমে পড়া সোহিনী বা বসন্ত রাগের… সেই রেকর্ড প্লেয়ারের হাত ধরে। অথবা হ্যারি বেলাফন্টে শুনতে শুনতে আনন্দে উত্তাল হওয়া, নির্মলেন্দু চৌধুরীর লোকগান শোনা। সেই রেকর্ডের ছবিগুলোও আমার মুখস্ত। নির্মলেন্দুর কাভারে সূর্যাস্তে নদীতে ভাসানো নৌকার ছবিটা এখনো চোখে ভাসে।
দিদি এই আবহে ডাঁই করা বাবার ষাট দশকের ছাপমারা পুরনো রেকর্ড, পুরনো গানের তুক ভেঙে নিয়ে এল সমসাময়িক ইংরেজি গানের অভ্যাস। যা কিনা দিদির নিজের, সমবয়সী, রহস্যময় জগতের মত। জে আলফ্রেড প্রুফ্রকের কবিতা দিদি প্রথম পড়ল ক্যালকুলাস কষতে কষতেই। আর শুনল এইসব নিদারুণ ব্যর্থ প্রেমের গানগুলো। ক্যান ইউ হিয়ার দ্য ড্রামস ফার্নান্ডোজ? অথবা, রেনি ডেজ অ্যান্ড মানডেজ… এই অধরা জগতের নিরিখে তখনো হয়ত বা আমি অনেক ছোট, আমার হয়ত ততটা প্রবেশাধিকার নেই। শুধু ঘরোয়া জমায়েতে দিদি এসব গান যখন গায়, তখন আবেগ দোলা দেয়। দিদির সঙ্গে গায় মামাতো দিদিরা, তুতুন মিতুন মহুয়ার জুটি একটা ছোটখাট ব্যান্ড হয়ে ওঠে। ওরাই একবার দিদার বাড়িতে তেতলার ঘরের দরজা দিয়ে শ্যাডোজ বাজিয়ে সঙ্গে “পপ ডান্স” করেছিল বলে কী বকাই না খেয়েছিল মায়েদের কাছে। সাংস্কৃতিক খাপ পঞ্চায়েত বসে গিয়েছিল বাড়িতে। ইশ, এমন ব্রাহ্মভাবাপন্ন, রবীন্দ্রসংগীত শোনা বাড়িতে এসব কি পাশ্চাত্য বিজাতীয়তা, কী অপসংস্কৃতি!!! মনে পড়ল এসব সময়ের কিছু পরেই বামফ্রন্ট সরকারের চৌত্রিশ বছরের কর্মসূচী পাকাপাকি স্থান নেবে কলকাতায়, কলকাতার রেস্তোরাঁগুলোতে নিষিদ্ধ হবে গানবাজনা, অজস্র গুণী শিল্পী, বাঁশিবেহালা পিয়ানো অ্যাকর্ডিয়ান সাক্সোফোন বাদক , যাঁদের অনেকেই অ্যাংলো ইন্ডিয়ান, রুজি রুটির জন্য পাড়ি জমাতে বাধ্য হবেন মুম্বইতে বা চলে যাবেন বিদেশে… এই সব সময়ের কিছুকাল পরেই পূর্ত ও সংস্কৃতিমন্ত্রী যতীন চক্রবর্তী ঊষা উত্থুপের গানকে বলবেন অপসংস্কৃতি… আর আরো পরে সেই বাম সরকারই “হোপ ৮৪” নামে এক অনুষ্ঠান করে আবার চাইবেন যোগসূত্র গড়তে নতুন প্রজন্মের সঙ্গে। ডেকে আনা হবে সম্ভবত মিঠুন চক্রবর্তীকে।
আমার দিদির মতই, অজস্র বাঙালি ছেলেমেয়ে তখন এসব গানের তদ্গত শ্রোতা। যেমন রবিবারের বোর্নভিটা কুইজ কনটেস্ট। আমাদের প্রজন্মের অসংখ্যে ছেলেপিলের কুইজে দুর্দান্ত হয়ে ওঠার পেছনে শৈশবের ওই অনুষ্ঠান। আমিন সায়ানির অনুপম কন্ঠস্বরের মাহাত্ম্য যেমন, তেমনই কুইজও আমাদের সময়ের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বেড়ে ওঠার। আমাদের ইস্কুল আর কলেজ জীবন জুড়ে কত কুইজ কনটেস্ট। কত মাতব্বর কুইজ মাস্টার ছেলেরা নানা ইন্টার স্কুল চ্যাম্পিয়নশিপে বা ইন্টার কলেজ ফেস্টিভালে আসত। তাদের প্রেমে গদগদ মেয়ের দল। দুরন্ত জি কে -র ছেলেদের তখন গুগল জ্যাঠা ছিল না। সিধুজ্যাঠা আর ফেলুদাদের রাজ্যপাট তখন , জিকে জমানোর খাতা, জিকের বই, জি কে আদান প্রদানের আড্ডা , ক্যান্টিনের টেবিল চাপড়ে কত না জিকের আদানপ্রদানে ভরা সেই সত্তরের শেষ আর আশির শুরু।
সেই সময় আমাদের বয়ানে ট্যাঁশ আর বং, বা হাংলাবাংলাদের দুই দলে ভাগ হয়ে থাকার সময়। ইংরেজিয়ানা মানেই ট্যাঁশ। অথচ বাংলা ইশকুলে পড়া আমরা অনেক সময়েই ট্যাঁশেদের পছন্দের জিনিশকেও ভাল বেসেছি। তবু যদ্দিন না বাংলা ইশকুল ছেড়ে ইলেভেনে পড়তে গেলাম লেডি ব্রেবোর্নে আর মিশলাম তথাকথিত ট্যাঁশেদের সঙ্গে, আমাদের ওই বাতিক গেল না। আমরা ওরা, বাম কংগ্রেস, ট্যাঁশ বং নিয়েই আমাদের সত্তর আশির দশক।
সেই ত, আশির শুরু, আমাদের রেকর্ড প্লেয়ার, এল পি রেকর্ড ইপি রেকর্ড ছেড়ে বেরুনো, টেপ রেকর্ডারের যুগে পা দেওয়ার দশকও। পাড়ার মাইকে আর ডি বর্মণ শোনা আমরা ‘ফাটা রেকর্ডের মত ঘ্যান ঘ্যান করিস না ত ‘ বলতে জানি। কেননা আমরা ফাটা রেকর্ডে গান শুনেছি। একই জায়গায় সামান্য দাগ বসে গেলে সেখানেই ঠোক্কর খেয়ে চলে গ্রামোফোনের পিন, আর সেই লাইনটাই ঘুরে ঘুরে বাজে তখন। সে এক অত্যাচার।
এর পর আসবে লুজ হয়ে যাওয়া টেপের ফিতে, পেন্সিল দিয়ে ঘুরিয়ে সে টেপ টাইট করা। ময়লা হয়ে যাওয়া টেপের হেড। সেটায় হেড ক্লিনার লাগানো, তুলোর ইয়ারবাড দিয়ে। এমনকি উল্টে জড়িয়ে যাওয়া টেপের ঘং ঘং গান। মেশিনের মাথায় মাথায় জড়িয়ে ছিঁড়ে যাওয়া টেপকে, কাঁচি দিয়ে সমান করে কেটে আবার পাতলা করে নিপুণ হাতে সেলোটেপে জোড়ার কান্ডকারখানা।
বুশ টেপ রেকর্ডারে নিজেদের বেসুরো বাঁকাচোরা গান বা নাটিকা অভিনয় করে তুলে রাখা, অন্যদের শোনানো, আবৃত্তি টেপ করা। সব হল এ জীবনে। আর হ্যান্ডেল ওয়ালা সে টেপ রেকর্ডার এখানে সেখানে টেনে ক্যাসেট বাজিয়ে শোনার স্বাধীনতা প্রাপ্তি, তা থেকে শুরু করে বড় মিউজিক সিস্টেমে গান শোনা আর ফাঁকা ক্যাসেট এনে এ ওর ক্যাসেট থেকে কপি করে নেওয়া, ডবল ডেক সিস্টেমে, এই পর্যন্ত বৃত্ত সম্পূর্ণ হল ১৯৯০ -৯৫ পর্যন্তই।
এদিকে ১৯৭৫ সালে এসেছে টেলিভিশন, সাদাকালোর যাদু। ভুল করে দু বোন ভাবা ঘোষিকা শাশ্বতী -চৈতালীর ম্যাচিং দক্ষিণী চওড়াপাড় শাড়ি, চুলে ফুল আর বড় টিপের মাধুর্য হু হু করে কপি করছে দিদি বৌদিরা। আছে পয়লা বৈশাখের সকালের আসরে নতুন ধারার অনুষ্ঠান আনা প্রিয় মুখ, সাংস্কৃতিক মুখ শ্রী পঙ্কজ সাহার দিনকাল।
পেলে যেবার খেলতে এলেন, পাশের বাড়িতে তিলধারণের স্থান নেই। তখন আমাদের টিভি ছিল না তাই সেবাড়িতেই দেখতে গেলাম। হৈ হৈ কান্ড রৈ রৈ ব্যাপার। গোড়ার দিকে ত, পাড়ার যে কোন একটিই বাড়িতে টিভি থাকত আর পালে পালে প্রতিবেশী তা দেখতে আসত। কোন বাধাবন্ধ ছিল না।
ইতিমধ্যে গোটা সত্তর দশক জুড়ে রবিবাসরীয়র পাতাগুলোতে তারাপদ রায়ের প্রিয় কলাম পড়ে, নবনীতা দেবসেনের দুই কন্যার বেড়াল উদ্ধারের জন্য দমকল ডাকার গল্প পড়ে, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের হাসির লেখার সুস্বাদের বুড়বুড়ি কেটে যে সপ্তাহান্ত আমাদের কাটত, আশি শুরু হতে হতেই তা ভরে উঠেছে টিভির সিনেমা সিরিয়ালে। ১৯৮০ তে উত্তমকুমারের চিরবিদায় আর বাঙালিনীদের হাহুতাশের পরের দশ বছর টিভিকে শাসন ও কলকাতার মৃতপ্রায় ছবিঘরগুলিকে কিছুটা চাঙ্গা করেছেন তিনি। ১৯৮০, সেই একই বছর দাদার কীর্তি ছবিটি এল আর বছর খানেক ধরে চলল আমাদের বাড়ির পাশের বিজলি সিনেমায়। একেক ছেলে বা মেয়ে তখন একাধিকবার ঢুঁ মেরেছে ওই ছবিতে। আমাদের শৈশবে গুপি গাইন বাঘা বাইনের এই কৃতিত্ব ছিল। প্রায় মৌরুশিপাট্টা করে সিনেমাহল গুলিতে বসে গিয়েছিল গুগাবাবা। আর এবার, আমাদের কৈশোরের প্রেমেপড়ার জন্য হাজির হলেন তাপস পাল, সেই ভোলাভালা মিষ্টি বোকামির আদল মেখে।
তখন, সেই আশির দশকের আরেকটি বড় বিনোদন টিভিতেই সাদাকালো উত্তম সুচিত্রার ছবিগুলি ফিরে দেখা। ভিদিও ক্যাসেট আসবে তারপরে। সিডি তখনো আসতে দেরি প্রায় এক দশক। ভারতে মনমোহনীয় অর্থনীতি এসে আমাদের অবাধ বিনোদনের ৭০ চ্যানেলের, বে ওয়াচের দরজা খোলারও প্রায় ততটাই দেরি।
১৯৮৮ সাল, অনেক বাড়িতেই রঙিন টিভি এসে গিয়েছে তখন, রবিবার সকালে রাস্তা শুনশান, বাচ্চাদের বল পেটানো, বড়দের আড্ডা রোয়াকে রোয়াকে, সবকিছু স্তব্ধ হয়ে যায়। সব্বাই মহাভারত দেখতে বসে গেছে হাতে তামা তুলসি নিয়ে প্রায়। পাড়াকে পাড়ার ছবি পাল্টে দেওয়া সেই সিরিয়াল। মাতাশ্রী পিতাশ্রী বলা তার আগেই শুরু হয়েছিল রামায়ণ সিরিয়ালের হাত ধরে। তবে মহাভারত অনন্তকাল প্রায় চলল বলে, আর আমাদের দেবশ্রী আমাদের রূপা তাতে অভিনয় করলেন বলে, ঘরে ঘরে অজস্র রঙিন টিভির খরিদ্দারি হল। আমাদের সেই “দেরিতে ভোগ্যপণ্য আসা” বাড়িতেও টিভি এল যতদিনে ততদিনে আমাদের ইস্কুল পাশ হয়ে গিয়েছে। কলেজে পড়ছি। ১৯৮৪ সালের একটা সকাল, আমার জন্মদিনের সকাল তাই কলেজ যাইনি। দিদি তখন রাজাবাজারে অ্যাপ্লাইড ম্যাথস পড়ছে। ধীরগামী জন্মদিনের সকাল, ৩১ অক্টোবরটা খান খান হয়ে গেল ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর খবরে। হতবাক আমরা প্রত্যক্ষ করলাম আমাদের ভবানীপুর অঞ্চলে তুমুল দাঙ্গা। তরুণ কংগ্রেসিরা জ্বালিয়ে দিল লুট করল যদুবাবু বাজার অঞ্চলের অজস্র শিখ সর্দারজিদের ট্যাক্সি, অসংখ্যা কাপড়ের, ইলেকট্রনিক্স এর দোকান। দিদি সেদিন প্রাণ হাতে করে রাজাবাজার থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরেছিল। পথে দাঙ্গার অবশেষ দেখতে দেখতে। পরিচিত, ভীষণ হাসিখুশি শিখ দোকানির পাগড়ি খুলে মাটিতে গড়াচ্ছে , দেখেছিল। পথে ভাঙা কাচ মাড়িয়ে এসেছিল ।
আমাদের পৃথিবী রাজীব গান্ধি এসে পাল্টে দেবেন এর পর। আর ১৯৮৯ তে তিনিও চলে যাবেন আততায়ীর হাতে। হাজরা মোড়ে হঠাৎ গজিয়ে উঠবে শহিদ বেদি। আমাদের জীবনে ল্যান্ড ফোন হঠাৎ সস্তা হয়ে যাবে, এস টি ডিও অনেকটাই সস্তা। আর ততদিনে টেলিভিশনে খুব প্রিয় হয়ে উঠেছে এক নতুন প্রোগ্রাম, বাঙালি পরিচালিত। প্রণয় রায়ের ওয়ার্ল্ড দিজ উইক। আমাদের প্রেমে পড়ার নতুন আইকন, টিভি জার্নালিস্ট, প্রথম প্রজন্মের… বদলে গেছে আমাদের সামনের পথ, আমাদের দুনিয়া।
ছবি ঋণঃ https://www.reddit.com/
প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
দ্বিতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তৃতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
চতুর্থ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
পঞ্চম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
ষষ্ঠ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সপ্তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
অষ্টম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
নবম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
দশম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
একাদশ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
দ্বাদশ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
ত্রয়োদশ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
চলবে…
Khub bhalo